বাঁচার আর্তনাদ
লেখায় :- ফেরদৌস আহমেদ।
গভীর রাতে মা গো আমায়, কোথায় নিয়ে এলে,
যাচ্ছ কোথায় অন্ধকারে ,আমায় একা ফেলে!
আমায় ফেলে যাসনে মা গো, ধরছি তোমার পা,
আমার ভীষণ ভয় করে মা, কাঁপছে আমার গা।
দেখ মা চেয়ে আকাশ জুড়ে ,মেঘ করে টলমল,
বৃষ্টি এলে তোর খোকা মা, কোথায় যাবে বল?
শোন মা কানে আসছে ভেসে, শিয়াল শকুনের ডাক,
গাছের ডালে ডাকছে শোন, হুতুম পেঁচা কাক।
আমায় রেখে যাসনে মা এই, শিয়াল শকুনের ভিড়ে,
একলা পেলে ওরা আমায় ,খাইবে ছিড়ে ছিড়ে।
এই জ্বালাতন সইতে আমি ,পারব না রে মা,
দোহাই লাগে মা গো আমায়, সঙ্গে নিয়ে যা।
দয়া করে আমায় যদি, নিস রে মা তোর ঘরে,
কথা দিলাম কোন দিন ও, জ্বালাইব না তোরে।
তুই কখনো থাকিস যদি ,গভীর ঘুমে মেতে,
তখন আমার ক্ষুধা পেলেও, চাইব না দুধ খেতে।
আমার পেটে যতই পড়ুক ,কান্না ক্ষুধার ধূম,
তবুও আমি কাঁদব না মা ,ভাঙব না তোর ঘুম।
সবাই যখন খেলবে পুতুল, খেলবে সবাই বল,
আমি তখন একলা বসে, মুচব চোখের জল।
মাটির উপর আঁকব পুতুল, পুতুল খেলে নিতে,
তবু তোমায় বলব না মা ,পুতুল কিনে দিতে।
সত্যি আমি তোমার দয়ায়, যাই যদি মা বেঁচে,
বড় হয়ে আমি তোমার, কাপড় দেব কেচেঁ।
অসুখ হলে তোমার মাথায়, বুলিয়ে দেব হাত,
খাইয়ে দেব নিজের হাতে, রান্না করে ভাত।
সত্যি সে দিন সুখে মা গো ,উঠবে তুমি কেঁদে,
ভোরে উঠে দেখবি যখন ,ভাত রেখেছি রেঁধে।
বৃষ্টি এলে সবাই যখন ,ভিজবে মনের সুখে,
আমি তখন ফিরব ঘরে ,পাষান বেঁধে বুকে।
চোখের জলে ভাসিয়ে দিয়ে, বৃষ্টি ভেজার গান,
দৌড়ে এসে তুলব তোমার, রৌদ্রে দেওয়া ধান।
আমি তোমার ভাত রাধিঁব, আনব ঘাটের পানি,
তোর মা কোন থাকবে না কাজ, তুই হবি রাজরানী।
দা*সির মতো থাকব আমি ,তোর চরণে পরে
তবু আমায় একটুখানি, ঠাঁই দে মা তোর ঘরে।
বিনা দ্বিধায় ঠাঁই দে আমায়, করিস না তুই ভয়
আমি কভু বলব না মা ,আমার আমার পরিচয়।
আমার দ্বারা কখনো মা, ভাঙবে না তোর মান,
বলব না মা আমি যে তোর, অবৈধ সন্তান।
তবু আমায় মারিস নে মা ,যাস নে একা ফেলে
দয়া করে বাঁচতে দে মা, নে না কোলে তুলে।