Posted on

মৃত্যু

ফেরদৌস আহমেদ

জন্মেই শুনি
মৃত্যুর পদধ্বনি।
অজস্র মৃত্যুরা ধীর ভীরু পায়
চারপাশে নিশ্চুপ ঘুরিয়া বেড়ায়।
আমি কোথায় বাঁধব নীড়
চারিদিকে শুধু মৃত্যুর ভীড়।
স্তব্ধ নিঝুম নিশুতি রাতের সনে
মৃত্যুরা হেঁটে যায় কুসুমের বনে।
উঠোনের কোণে বকুল ফুটেছে শাঁখে
শোন শোন ঐ মৃত্যুরা ডাকে।
শোনো হে বকুল
শিমুল পারুল
অনেক হয়েছে বেলা
মৃত্যু এসেছে দ্বারে
এবার বিদায় নেবার পালা।
নিশীথের ফোটা ফুলগুলো সব
প্রভাতে ঝরিয়া পড়ে,
মৃত্যুর বুকে পাপড়ি ছড়িয়ে
মৃত্যু জড়িয়ে ধরে।
সবুজ শ্যামল তমাল তরুর বনে
দখিনা বাতাস মৃত্যু ভাসিয়ে আনে
কোমল বাতাস সবুজের বনে সবুজের ঢেউ তুলে
শুকনো পাতারা ঝরঝর ঝরে মৃত্যুর কোলে ঢলে ।
ধরণীর পড়ে ঝরে কত পাতা ঝরে কত ফুল
চারিদিকে শুধু মৃত্যুর খেলা মৃত্যুর হুলুস্থুল।
অজস্র মৃত্যুর ভিড়ে আমি কোথায় বাঁধব নীড়
মৃত্যু রথের অপেক্ষমাণ আমি এক মুসাফির।
দেখ ভাই দেখ
ঝড়ের ডানায়
অজস্র মৃত্যুর ভিড়
বৈশাখী ঝড়ে
ভেঙে ভেঙে পড়ে
পাখপাখালির নীড়।
ভেঙে গেছে ডিম
মরে গেছে পাখি
মরে গেছে তার ছানা
এমনি করিয়া
ক্ষণে ক্ষণে ভবে
মৃত্যুরা করছে হানা।
কৃষকের বাঁকা
কাস্তের দাঁতে
নেমেছে মৃত্যু ঢল
কাটা পরে মরে
শস্যের গাছ
তরুলতা তৃণদল।
সারাক্ষণ আমি বাতাসে ভাসতে শুনি
কারো না কারো মৃত্যুর বাণী।
শোনো শোনো ওই মুয়াজ্জিন ডাকে
মসজিদের মিনারায়
রহিম মিয়া মারা গিয়েছে
ছুটে আয় জানাযায়।
অজস্র মৃত্যুরা ঘিরে রেখেছে
এই বিশ্বচরাচর
মৃত্যুর দ্বীপে বাঁচার আশায় কি করে বাঁধব ঘর।
আমার দরিদ্রতা ভাঙ্গা ঘর দেখে, কেন করো উপহাস!
মৃত্যু ডাকলে চলে যেতে হবে, আমরা মৃত্যুর ক্রীতদাস।

——-বন্ধুকে জানিয়ে দাও

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments